"প্রিয়তমা" (পর্ব ১) - bangla sad story - অতিরিক্ত রোমান্টিক গল্প,মিষ্টি মেয়ের প্রেমের গল্প,হঠাৎ প্রেমের গল্প,সেরা প্রেমের গল্প,রোমান্স প্রেমের গল্প

প্রিয়তমা (পর্ব ১)

আমি রুদ্র, পুরো নাম রুদ্র দাস এই নামটি আমার দিদা দিয়েছিলেন।সোমবারে জন্মে ছিলাম সেই কারণে ভগবান শিবের অপর নাম রুদ্র সেই নামে নামকরণ করেছিলেন ।

আজ তোমাদের গল্পটা বলার আগে নিজের সম্বন্ধে কিছু বলে রাখা দরকার, আমি তোমাদের আগেই আমার নাম বলে রেখেছি তাই আর বাড়ালাম না। কিন্তু আমার ডাকনাম চিকু এই নামে ই পুরো বাড়ির লোক ডাকে। আমি সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেড়ানো একটি ছেলে

আমার বাড়িতে চারটি লোক আমি মা বাবা আর দিদা। বাড়ির একটা ছেলে সবার আদরের। মোটামুটি আমার সম্বন্ধে সবার একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। এবার গল্পে আসে যাক -

আমি রুদ্রদাস আমার বাড়ি বহরমপুর এই জায়গাটি গ্রাম বা শহর বলা চলে না এদিকে একটি মফস্বল বলতে পারেন। আমি এলাকারই একটি সরকারি স্কুলে পড়তাম তবে পড়াশোনা খুব একটা খারাপ ছিলাম না। তবে মারামারি ঝগড়া স্কুলে গিয়ে গন্ডগোল ফুটবল খেলায় সবার আগে এগুলোতে আমি খুব ভালো ছিলাম বলতে পারেন। অন্যের গাছের ফল চুরি করে খাওয়া, দিল মেরে বাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়া ছিলো নিত্যদিনের কাজ। এর জন্য অনেক মার খেতে হয়েছে কিন্তু আমি শোধরাইনি ।

তবে আমি আমার স্কুল জীবনে যেটা করিনি সেটা হচ্ছে প্রেম, স্কুলে মেয়েদের সাথে মারামারি ঝগড়া অনেক করেছি কিন্তু প্রেম কোনদিন করিনি। প্রেমটা কি সেটা আমি জানতামই না। স্কুল জীবন আমার খুব সুন্দর কেটেছিল তারপর স্কুল শেষ হবার পর বাবা বলল কলেজ স্ট্রিটে আমার একটি মাসির বাড়ি পাঠিয়ে দেবে আমাকে কলেজে পড়ার জন্য।

বাবার ইচ্ছামত কলকাতা ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হলাম বায়োলজি অনার্স নিয়ে। এইখানে এসে থেকেই অনেকটা মন খারাপ বাড়ির কথা মনে পড়ছে। আমি কয়েকবার মাসির বাড়িতে ছিলাম মায়ের সাথে কিন্তু এই প্রথম একা আসলাম। তাই মনটা কেমন একটু ভারী হয়ে আছে।

*এক সপ্তাহ পর:-

এখন কলেজের এডমিশন এর সব ঝামেলা শেষ হয়ে গেছে কাল থেকে ক্লাস চালু হবে।

আজ ১৫ ই জানুয়ারি ২০১১ সাল আজ আমার জীবনে প্রথম কলেজ ক্লাসের দিন তাই একটু এক্সাইটেড আছি সকাল থেকে । তাড়াতাড়ি স্নান করে রেডি হয়ে গেলাম।

মাসি:- রুদ্র খাবি আয়।

ঘরের ভেতর থেকে আমি বললাম হ্যাঁ মাসি আসছি।

এইখানে একটু মাসির সম্বন্ধে কিছু বলে রাখি আমার দুটি মাসি এটি হলো আমার বড় মাসি, আমি মামনি মাসি বলে ডাকি এই মাসির কোনো ছেলে নেই তাই আমাকে নিয়ে ছেলের মত ভালবাসে।

খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম কলেজের জন্য

কলেজে এসে একটু অবাকই হলাম এত ছেলে মেয়ে একসাথে তো কোনদিন দেখিনি এবং নিজের ডিপার্টমেন্ট খুঁজে নিতে হয় একটু অসুবিধ করলাম তবে একটু খোঁজার পর পেয়ে গেলাম ক্লাস রুম।

তারপর যেমন আর কি প্রফেসাল লেকচার দিয়ে যাচ্ছেন, আমার কিন্তু খুব বোরিং লাগছিল।

তারপর আর কি আমার প্রথম দিনের সব ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরব ভাবছি ঠিক তখনই আমার সঙ্গে ঘটে গেল জিনিস যেটা এর আগে কোনদিন ঘটেনি এক অন্যরকম অনুভূতি আমি আমার জীবনের প্রথম কোন মেয়েকে যাকে দেখে মনে হলো বুকের ভিতরে কেউ হাতুড়ি দিয়ে নিরন্তর আঘাত করে চলেছে। দেখলাম যে শীতের পড়ন্ত বিকেলের শেষ রোদ এসে পড়েছে ভিড়ের মধ্যে থাকা একটি মেয়ের মুখে , সেই মেয়েটির যদি রূপের বর্ণনা দিতে হয় তাহলে ঠিক এইরকম -বড় বড় টানা টানা চোখ, মুখ ভর্তি এক তৃপ্তির হাসি এবং লম্বা লম্বা খোলা চুলগুলি হালকা হাওয়ায় দুলছে এবং তাদের মধ্যে কিছু চুল বারবার মুখের মধ্যে চলে আসছে হাওয়া দুলাতে। এবং এর সাথে শীতের পড়ন্ত বিকেলের রোদ এইসব মিলিয়ে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের দর্শন পেয়েছিলাম । তবে যদি আমি কবি হতাম তাহলে হয়তো আরো ভালো কিছু উপমা ব্যবহার করতে পারতাম। তোকে দেখার পর থেকেই যেন বুকের ভেতর আগুন লেগে গিয়েছে মন যেন আর আমার নিজের দখলে নেই। সেই জন্যই হয়তো তুমি বলে গিয়েছিলে -

        “প্রহর শেষের আলোয় রাঙা

        সেদিন চৈত্র মাস।

        তোমার চোখে দেখেছিলাম

        আমার সর্বনাশ।”

Next Part - Comming Soon

Post a Comment

Previous Post Next Post